ই বছর দূগ্গা পূজা
– সত্য দেব পতি
বামুন গাঁয়ের আটচালাতে মাইয়া ছেইলার ভীড় লাগ্যেছে বেদম!
বড় বড় ঢোল বাইজছে মাদৈল ধমসা কম,
শুনছি হোথায় বড় পূজা কতো লুকের মেলা-
লৈতন শাড়ি পৈরছে মেলাই চৈলছে সিঁন্দুর খেলা!
হাড়াম হামর বাগাল রাখাল মাথায় গামছা বাঁধা,
গলাঘরে বড় পরব উকেও লাগে চাঁদা!
মাস পুহালেই তিনশের চাল ঘরেক পাছেই দেই-
পরব পাল্যে পিঠা পানা আর মুঢ়ি খৈ…
হাঢ়াম গড়ম চাঁদাও দিল বামড়ে বঙার হাতে,
ঠাউকরাইনটা ফেসাদ কৈরছে গাঁয়ের ছ্যালার সাথে-
নাই বুঝি নাই জানি কিসে কিটা হৈল?
হামার মরদ কাজের থাইকে ঘরকে ঘুইরে আ্যলো…
মাসের শেষে তিন শের চাল আর তো দিবেক লাই,
ছাঁচের কোলে ডাঁড়ায় হাড়াম হামার পানে চায়!
ভরা ভাদর এই গেল আশিন হৈল শুরু…
ধান লাই চাল লাই গাছে উইঠছে গরু,
গলা ঘরে যাঁইয়ে শুনি কিসে কি টা হৈল;
গুলূন গুলা ঘরে বৈসাঁয় গাইল মন্দ দিল!
নাই বুইঝে নাই শুইনে আকুল হৈল বুক-
ছ্যেলা প্যেলায় কিটা খাবেক শুখাঁয় আছে মুখ।
গলার গাঁয়ে পুজার হিড়িক কুকুরে না খায় ভাত!
হামার হাঁড়ি উগ্যাড়ে তুলা ভোখে কৈরল্যো কাত;
হাজার হাজার জ্বলছে আলো বাবু পাড়ার বাঁধে!
হামার ঘরের আঁধার কুনে ভোকে ছ্যেলা কাঁদে-
দুগ্গা নকি সবার ঠাকুর বাবুর মুখের কথা…
পুজার চাঁদা দিতেই হবেক থাকতে হৈল্যে হেথা,
পেটের মাড়ি দিলাম তবু পুজার পেসাদ লাই;
তোদের দুগ্গা তোদের আছে হামদের কি তাই।
তোদের দুগ্গা খাচ্ছে কত মন্ডা মিঠাই ফল,
হামার দুগ্গা ভুখা থাকে খাঁয়ে বাঁধের জল!
তাহলে বল তোদের দুগ্গা কেমনে আমার মা?
হামার দুগ্গা উপাস করেই ঘুরছে খালি গা।